ডেইলি আমাদের ফোরাম প্রতিনিধি:২০১৭ সালের মে মাসে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিও হতে অতিরিক্ত ৪% কর্তনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে উদিয়মান শিক্ষক বাবেশিকফো যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল জব্বার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুইটি প্রবন্ধ লেখেন দালাল সমাচার -১ ও দালাল সমাচার-২ । উনার প্রবন্ধ শিক্ষক-কর্চারিগণকে এত বেশি উজ্জিবিত হন যে তরুন উদীয়মান শিক্ষক সমাজ অবসর কল্যান ট্রাস্টে অতিরিক্ত কর্তনের সম্মতি দানকারী সংগঠনসমূহ যেমন বিটিএ, স্বাশিপ, জমিয়তুল মুদাচেরিন এর বিপক্ষে নির্দলীয় একটি সংগঠন সৃষ্টির জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। সবুজ হাসান শুক্রবারের স্পেশাল নামে আর্টিক্যল লিখে শিক্ষক সমাজকে উদ্ভুদ্ধ করে । এমন এক পরিস্থিতিতে ২০১৭ সালের ১৭ জুন বাবেশিকফো মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম এর নেতৃত্ব কয়েকজন শিক্ষক আলোচনায় বসেন ও সিদ্ধান্ত নেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কল্যাণের জন্য নতুন একটি সংগঠন গড়ে তোলার। পরবর্তীতে জনাব দেলোয়ার হোসেন স্যারের নেতৃত্বে ২৮ জুলাই,২০১৭ তারিখ হতে পথ চলা শুরু করে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম (বাবেশিকফো) আত্বপ্রকাশ করে। স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত হয় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি। অল্প সময়ের মধ্যেই বাবেশিকফো সারা দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে একটি আস্থার সংগঠনে পরিণত হয়। জাতীয়করণের একদফা দাবীতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রায় পঞ্চাশ হাজার শিক্ষকের উপস্থিতিতে একটি বিশাল সমাবেশ করে। জাতীয়করণ যে শিক্ষকদের একটি অধিকার এই বিষয়টি শিক্ষকদের মাঝে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হন বাবেশিকফো।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ৬ টি শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় জাতীয়করণ প্রত্যাশী লিয়াজো ফোরাম এবং একটানা ২০ দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচিসহ ব্যাপক আন্দোলনের মাধ্যমে ৫% বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট এবং বৈশাখী ভাতা আদায করে।
অতিরিক্ত ৪%কর্তনের বিপরীতে অতিরিক্ত সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম (বাবেশিকফো) নেতৃবৃন্দ মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয় এবং মহামান্য হাইকোর্ট শিক্ষকদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। রায়ে বলা হয় অতিরিক্ত ৪% এর জন্য অতিরিক্ত সুবিধা দিতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রায়টি এখনো কার্যকর হয়নি। এ রায় কার্যকরের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতাসহ বাবেশিকফো কর্মসূচি পালন করে আসছে। বাবেশিকফো দলীয় লেজুরবিত্তিহীন সংগঠন হলেও দুখ:জনক হলেও সত্য শীর্ষপদসমূহে তৎকালীন সরকারীদলের সংগঠন ও অংগসংগঠন সমুহের পদধারীরা দখল করার চেষ্টা করলেও দ্বিতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাখান করে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ব্যাক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয় ও সমমনা সংগঠন সমূহের সমন্বয়ে জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট গঠন করে ২০২৩ সালে টানা ৪৪ দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন করে। বিভিন্ন কারণে ও সরকার সমর্থিত সংগঠনসমূহের অসহযোগিতা ও বিরুদ্দ্ধাচারন এর কারনে ৪৪ দিনের আন্দোলন ব্যার্থ হয় । ব্যার্থ থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৫ সালে টানা ২২ দিন আন্দোলনের মাধ্যমে ভাতাসমূহ ও বাড়িভাড়া বৃদ্ধির প্রতিম্রুতি আদায় করে ।ইতোমধ্যে উৎসব ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘোষিত বাজেটে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতার জন্য বরাদ্দ রাখা হযেছে। বাড়িভাড়া যেন স্কেলের শতকরা হিসেবে বৃদ্ধি পায় সে লক্ষ্যে বাবেশিকফো নেতৃবৃন্দের কুটনৈতিক তৎপরতা অব্যহত আছে। সংগঠনটিতে ইতোমধ্যে তৃতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন প্রাণবন্ত নেতৃত্ব জায়গা করে নিয়েছে। ইশাল্লাহ্ অতীতের চেয়ে বাবেশিকফো আরও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে শিক্ষক-কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকবে।
You cannot copy content of this page