এমপিওভুক্তির (মাসিক বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) দাবিতে আবারও রাজপথে নেমেছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। ন্যায্য অধিকার আদায়ে তারা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা, যা তাদের দাবির গভীরতা এবং হতাশার চিত্র তুলে ধরেছে।

‘সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আশ্বাস পেয়ে আসলেও এমপিওভুক্তির কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। তাদের অভিযোগ, একই কারিকুলামে পাঠদান করেও তারা সরকারি বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত, যা চরম বৈষম্যমূলক।

গত ১৬ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ২১ জুন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা তাদের কর্মসূচি শুরু করেছেন। শিক্ষক নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ধাপে ধাপে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি নতুন বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। এই বিধিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর আবেদন গ্রহণ শুরু হবে।

এর আগে, চলতি বছরের মার্চ মাসে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে সরকার নীতিগতভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল সচল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং মে মাসের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা পার হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বেড়েছে।

বর্তমানে “বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১” অনুযায়ী এমপিওভুক্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে নতুন যে বিধিমালা প্রণয়নের কথা বলা হচ্ছে, তাতে কিছু পরিবর্তন ও নতুন শর্ত যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সারাদেশে কয়েক হাজার নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত আছেন, যারা বছরের পর বছর ধরে সরকারি বেতন-ভাতা ছাড়াই শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন। দ্রুত এমপিওভুক্তির সুস্পষ্ট ঘোষণা এবং তার বাস্তবায়নই এখন তাদের প্রধান দাবি।