• সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে নিহত ৩। হাটহাজারীতে স্লুইসগেটের পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। থানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ধামইরহাটে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন মানিকগঞ্জে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৫ নওগাঁয় অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার ৮ ধাপে আবেদন ফরম পূরণ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির “সর্বজনীন পেনশন নয়, সরকারি পেনশনই চাই” — আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভালুকায় আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাকবিশিস’ ৪৪তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ

PR পদ্ধতি: হারানো ভোটের মূল্য ফেরানোর সময় কি আসেনি?

প্রতিনিধির নাম / ৭৭ বার দেখা
আপডেট : রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

মো: তানজিম হোসাইন, বিশেষ প্রতিনিধি: বাংলাদেশে নির্বাচন মানেই এক ধরনের গণনা যুদ্ধ—কে কত ভোট পেল তা বড় বিষয় নয়, কে সবচেয়ে বেশি ভোট পেল সেই প্রশ্নই নির্ধারণ করে তার জয়-পরাজয়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় First Past the Post (FPTP), যা আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই পদ্ধতি কি সত্যিকার গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারছে?

FPTP পদ্ধতিতে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পায়, সেই জয়ী হয়। কিন্তু এতে করে অনেক সময় ৪০-৪৫ শতাংশ বা তারও বেশি ভোট পাওয়া দল বা প্রার্থী পরাজিত হয়—শুধু জয়ীর ভোট ১-২ শতাংশ বেশি ছিল বলে। এর মানে দাঁড়ায়, দেশের বেশিরভাগ ভোটার যে প্রার্থী বা দলকে চায়নি, সেই সরকার গঠন করে। ভোটের মূল্য তখন অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়।

অন্যদিকে, PR (Proportional Representation) বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি এমন এক ব্যবস্থা যেখানে যেই দল যত শতাংশ ভোট পায়, তারা সেই অনুপাতে সংসদে আসন পায়। ফলে, জনগণের রায় আরও বাস্তব রূপ পায়। কেউ কেউ এটিকে ‘ভোটের প্রকৃত প্রতিচ্ছবি’ বলেও অভিহিত করেন।

PR পদ্ধতির মূল দর্শন হলো প্রতিটি ভোটের মূল্য আছে, এবং গণতন্ত্র মানেই সব মতের সম্মিলিত প্রতিনিধিত্ব। বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক দল নির্বাচনে অংশ নেয়, কিন্তু সংসদে জায়গা পায় মাত্র ১-২টি। একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি হয়, বিরোধী কণ্ঠ চাপা পড়ে, আর পার্লামেন্ট হয়ে ওঠে একমুখী।

যদি PR পদ্ধতি থাকত, তাহলে হয়তো আমরা দেখতে পেতাম—

★বিরোধী দলগুলো সংসদে শক্ত অবস্থানে থাকত।

★সংখ্যালঘুদের, শ্রমজীবী মানুষের, কিংবা প্রান্তিক রাজনৈতিক শক্তির কণ্ঠ প্রতিফলিত হতো

★আইন পাশ হতো বেশি আলোচনার মাধ্যমে, নয় চোখ বন্ধ করে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে

অনেকে আশঙ্কা করে থাকেন, PR পদ্ধতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে, জোট সরকার গঠনে সমস্যা হবে। কিন্তু গণতন্ত্র মানেই তো মতপার্থক্যের সম্মান এবং আলোচনার পথ। যদি মতের মিল না থাকে, তাহলে জোর করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আইন পাশ করাটা গণতন্ত্র নয়, সেটা সংখ্যাতন্ত্র মাত্র।

প্রতিবার নির্বাচন শেষে ভোটারদের একটি বড় অংশ হতাশ হয়ে পড়ে—তাদের ভোটের মূল্য থাকল না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো PR পদ্ধতিই দিতে পারে।

গণতন্ত্র তখনই পরিপূর্ণ হয়, যখন তাতে ভিন্নমতের জায়গা থাকে, সকল কণ্ঠস্বরের প্রতিনিধিত্ব থাকে, এবং জনগণের রায় প্রকৃত অর্থে প্রতিফলিত হয়। PR পদ্ধতি শুধু একটি ভোটের হিসাব নয়, এটি হতে পারে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও পরিপক্ব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার একটি পদক্ষেপ।

ভবিষ্যতের নির্বাচন কি হবে প্রতিনিধিত্বমূলক, না একমুখী—সেই সিদ্ধান্ত আজকের চিন্তায়ই নির্ভর করছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page