• সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে নিহত ৩। হাটহাজারীতে স্লুইসগেটের পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। থানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ধামইরহাটে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন মানিকগঞ্জে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৫ নওগাঁয় অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার ৮ ধাপে আবেদন ফরম পূরণ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির “সর্বজনীন পেনশন নয়, সরকারি পেনশনই চাই” — আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভালুকায় আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাকবিশিস’ ৪৪তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ

সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা: ঢাকার বাইরে ঝুঁকিতে ঝিনাইদহ, মাগুরা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুর

প্রতিনিধির নাম / ১৫১ বার দেখা
আপডেট : সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

এম. আরিফুজ্জামান (পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি):সারা দেশেই বেড়ে চলেছে এডিস মশার প্রকোপ। আগের তুলনায় চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের হারও বেড়েছে। আসছে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং একই সময়ে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৮৩ জন। গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৫ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৮ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৩ জন রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত মোট আট হাজার ৭২৯ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ২৯ জুন পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে নয় হাজার ৮৬৭ জন। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ শতাংশ নারী রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং চলতি বছরে এ যাবত ডেঙ্গুতে ৪২ জন মারা গিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনও আমরা ডেঙ্গুর আসল প্রকোপ দেখিনি। কেবল শুরুটা দেখছি। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হবে এবং মৃত্যুর সংখ্যাও সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।

চলতি বছরে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই ব্রুটো ইনডেক্সে এডিস মশার ঘনত্ব ২০ শতাংশের ওপরে। এতে সারাদেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে।

তারা বলছেন, আগে এডিস মশার বিস্তার কেবল রাজধানীতে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার সক্ষমতা সীমিত। তাই এখনই পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কার্যকর মশা নিধন ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তা না হলে ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার এবং মৃত্যু আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ব্রুটো ইনডেক্স নামে পরিচিত। কোনো এলাকায় লার্ভার ঘনত্ব যদি ২০ শতাংশের বেশি হয়, তাহলে সেই স্থানকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। এ বছর রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

এডিস মশা নিয়ে আইইডিসিআরের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাইরে ঝিনাইদহ, মাগুরা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুরে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি বেশি। ঝিনাইদহের শহর এলাকায় ২৭০টি বাড়ি পরিদর্শন করে ৫৪টি এডিসের লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৬০ শতাংশ, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া মাগুরায় ব্রুটো ইনডেক্স ৫৫.৫৬ শতাংশ এবং পিরোজপুরে ২০ শতাংশ। পটুয়াখালী পৌরসভায়ও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, সেখানে ব্রুটো ইনডেক্স ১৯.২৬ শতাংশে পৌঁছেছে, অর্থাৎ উচ্চ ঝুঁকির সীমানায়। প্লাস্টিক ড্রাম, প্লাস্টিক বাস্কেট ও দইয়ের খালি পাত্রে লার্ভার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বছরের শুরুর দিকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। জানুয়ারিতে ১,১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪, মার্চে ৩৩৬ এবং এপ্রিলে ৭০১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে মে মাস থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে এবং জুনে এসে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। আশঙ্কার বিষয় হলো, ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে, বিশেষ করে বরগুনায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এডিস মশার বিস্তার এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। বিশেষ করে রাজধানীর বাইরের এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page