অবিলম্বে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিগুলো বাস্তবায়ন হোক—এই প্রত্যাশা আজ শুধু শিক্ষকসমাজের নয়, গোটা জাতির হৃদয়ের ধ্বনি। এই দেশের প্রত্যন্ত গ্রামের খড়ের চালা থেকে শুরু করে শহরের ইট-কাঠের বিল্ডিং—যেখানেই শিক্ষা প্রদীপ জ্বলে উঠেছে, তার পেছনে আছেন একজন শিক্ষক। অথচ সেই আলো ছড়ানো মানুষটিই আজ অবহেলা আর অনিশ্চয়তার অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছেন।
জাতি গঠনের এই কারিগরদের জন্য চাই রাষ্ট্রের বাস্তবসম্মত স্নেহ-সংবেদনশীল দৃষ্টি। তাঁরা যেন আর অশ্রু লুকিয়ে না রাখেন, যেন আর ক্লান্ত হৃদয়ে শ্রেণিকক্ষে না যান—সেই মানবিক পরিবেশ নিশ্চিত করার এখনই সময়।
আমাদের দাবি—
🌿 সরকারি নিয়মে বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রদান হোক।
যে শিক্ষক দিনের পর দিন দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে আলোর দিশা দেন, তাঁর থাকার নিশ্চয়তা যেন রাষ্ট্র নিশ্চিত করে। বাড়িভাড়া ভাতার নামে সামান্য কিছু অঙ্ক নয়, চাই বাস্তবসম্মত বরাদ্দ।
🌿 পাঁচশো টাকার সীমাবদ্ধ চিকিৎসা ভাতা নয়, চাই সম্মানজনক চিকিৎসা ভাতা।
একজন শিক্ষক যখন অসুস্থ হন, তখন শুধু একটি দেহ নয়, একটি বিদ্যালয় কাতরায়। শিক্ষকের সুস্থতা মানেই শিক্ষার প্রাণবন্ততা। তাই তাঁর চিকিৎসা ব্যবস্থায় যেন কোনো প্রকার অযত্ন না থাকে।
🌿 শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান হোক।
শিক্ষকের পরিবারেও যেন ঈদের সকালে হাসিমুখে নতুন জামা পরে শিশুরা বলে—“আমার আব্বু একজন শিক্ষক!”
উৎসব হোক সকলের জন্য আনন্দময়, বৈষম্যহীন।
🌿 বিনোদন ও শ্রান্তি ভাতা প্রদান হোক।
শ্রান্ত হৃদয়ে জ্ঞান বিতরণ নয়—চাই পরিপূর্ণ প্রশান্তি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসার নিশ্চয়তা। শিক্ষক যেন হাঁপিয়ে না ওঠেন, তাঁর চিন্তা-চেতনা যেন সৃষ্টি করে আগামী প্রজন্মের আলোকবর্তিকা।
আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, এই দাবিগুলোর বাস্তবায়ন হলে ১৩ আগস্ট ঘোষিত কর্মসূচি আমরা প্রত্যাহার করা হবে ।
আমরা রাজপথে নামতে চাই না, চাই শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে।
শিক্ষক হাসলে জাতি হাসে, শিক্ষক কাঁদলে গোটা সমাজ কাঁদে।
তাই আর কালক্ষেপণ নয়।
আজই সময় সিদ্ধান্তের—একটি সাহসী সিদ্ধান্ত, একটি মানবিক সিদ্ধান্ত।
মাননীয় নীতিনির্ধারকগণ,
আপনাদের এই সিদ্ধান্তই একদিন ইতিহাসের পাতায় সম্মানের সঙ্গে লেখা থাকবে।
লেখা থাকবে—”তাঁরা শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন জাতির বিবেক, জাতির গর্ব শিক্ষকসমাজকে।”
আসুন, শিক্ষককে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দিই।
আসুন, শিক্ষা আর শিক্ষকের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলি সম্মান আর সাহচর্যের আলোয়।
জাতি আজ অপেক্ষায়—শিক্ষক যেন ক্লাসে হাসতে পারেন।
আর সেই হাসিই হোক দেশের আগামী দিনের অগ্রগতির অঙ্গীকার।
মো. আল আমিন
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার কম্পিউটার সাইন্স
প্রভাষক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
You cannot copy content of this page