এম. আরিফুজ্জামান, নিউজ ডেস্ক:মাধ্যমিক স্তরের চলমান কারিকুলাম (শিক্ষাক্রম) আরও যুগোপযোগী করে ২০২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুনভাবে চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এ শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবসম্মত পাঠদান হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমে নতুন এই শিক্ষাক্রম চালু হবে। পরে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। গত ২৫ জুন এ নিয়ে এনসিটিবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই নতুন কারিকুলামের একটি প্রাথমিক কাঠামো বা ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই পরিমার্জিত কারিকুলামে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের আন্দোলনের প্রতিফলন থাকবে বড় পরিসরে। তবে নতুন কারিকুলামের ভিত্তি হিসেবে ২০১২ সালের সংস্করণ নেওয়া হবে, নাকি ২০২২ সালের কারিকুলামকে ধরে এগোনো হবে; তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার মাধ্যমিকে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১২ সালের পুরনো কারিকুলামে ফিরে যায়। যদিও প্রাথমিক স্তরে ২০২২ সালের কারিকুলামই বহাল রাখা হয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৭ সাল থেকে নতুনভাবে পরিমার্জিত যে কারিকুলাম চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে, তা শুরুতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে কার্যকর হবে। এরপর প্রতি বছর এক শ্রেণি করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যান জানান, নতুন কারিকুলামে শিক্ষাদান ও শিক্ষাগ্রহণে গ্লোবাল প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন আসবে। সেইসঙ্গে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনেরও বড় প্রতিফলন থাকবে।

প্রসঙ্গত: গত ৪ জুন এক মতবিনিময় সভায় শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, ‘আমরা ২০২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য একটি নতুন শিক্ষা কার্যক্রম প্রস্তুত করছি। প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তি, মানসম্মত শিক্ষা—এসব বিষয় সেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বর্তমান শিক্ষাক্রমের বাইরে এসে মুক্ত চিন্তায় এগোতে হবে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগোনোর চেষ্টা করছি।’

এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কিছু বিষয় ছিল, যা ছিল সময়োপযোগী। নতুন যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে, সেখানে ২০২৩ ও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় থাকবে।

তবে, বিশেষজ্ঞদের অভিমত ২০২৭ সালে চালু হওয়া শিক্ষাক্রম কেমন হবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের প্রত্যাশার ওপর।