• মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
হাটহাজারীতে স্লুইসগেটের পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। থানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ধামইরহাটে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন মানিকগঞ্জে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৫ নওগাঁয় অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার ৮ ধাপে আবেদন ফরম পূরণ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির “সর্বজনীন পেনশন নয়, সরকারি পেনশনই চাই” — আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভালুকায় আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাকবিশিস’ ৪৪তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ আজ পহেলা মে, মহান মে দিবস

সময়ের দাবি: শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসা ভাতা

প্রতিনিধির নাম / ৩০৬ বার দেখা
আপডেট : মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫

যখনই জাতি গড়ার কথা বলা হয়, তখন প্রথমেই যার নাম আসে, তিনি একজন শিক্ষক। অথচ আশ্চর্যের বিষয়—এই শিক্ষকরাই আজ নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য রাজপথে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা কি কোনো সভ্য রাষ্ট্রের চিত্র?

দেশজুড়ে প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারী বছরের পর বছর ধরে দুইটি মৌলিক অধিকার—বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা—থেকে বঞ্চিত। তাঁদের দায়িত্ব আছে, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার গুরুদায়িত্ব আছে, কিন্তু নিজের জীবনের ন্যূনতম নিশ্চয়তা নেই।

এই দীর্ঘ বঞ্চনার বিরুদ্ধে শিক্ষকরা একবার নয়, বারবার গর্জে উঠেছেন।
🔸 দীর্ঘ দিনের অবস্থান কর্মসূচি,
🔸 স্মারকলিপি প্রদান,
🔸 সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা,
🔸 পথ আটকে গণমিছিল,
🔸 পথসভা ও প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন—
শত শত মিছিল-মিটিং, মুখরিত হয়েছে বারবার, কিন্তু রাষ্ট্রের কর্ণপাত হয়নি।

একজন শিক্ষক যখন নিজ জেলা ছেড়ে দূরের কোনো উপজেলায় গিয়ে দায়িত্ব পালন করেন, তখন তাঁকে থাকতে হয় ভাড়াবাসায়। অথচ কোনো বাড়ি ভাড়া ভাতা নেই।
যখন তিনি অসুস্থ হন, তখন চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়, কারণ চিকিৎসা ভাতা নেই।

সরকারি চাকরিজীবীরা নিয়মিত এই দুই ভাতা পান, অথচ শিক্ষকরা, যাঁরা আগামীর নাগরিক গড়েন, তাঁরা কেন এতদিন বঞ্চিত থাকবেন? তাঁরা কি এই রাষ্ট্রের নাগরিক নন?

অথচ প্রতিবার বাজেটে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয় নানা খাতে। বিদেশি সফর, প্রকল্প, প্রশিক্ষণ, পরামর্শক খাতে খরচের শেষ নেই। কিন্তু শিক্ষককে টিকিয়ে রাখার জন্য এই দুইটি ভাতা বরাদ্দ করতে রাষ্ট্রের হাতে যেন সময়ই নেই, সদিচ্ছা নেই।

তাহলে প্রশ্ন—শিক্ষকের কাছে কী শুধু দায়িত্ব আর আত্মত্যাগই চাওয়া হবে? জীবনটাও কি কিছু নয়?

একটি নির্মম সত্য হলো—শিক্ষক বাঁচলে শিক্ষা টিকবে। শিক্ষক মরলে শ্রেণিকক্ষ হয়ে উঠবে শূন্য।

যেখানে শিক্ষাকে “জাতীয় অগ্রাধিকার” বলা হয়, সেখানে শিক্ষকদের মৌলিক চাহিদা পূরণ না করে কেবল বক্তৃতা দিয়ে কি উন্নত জাতি গড়া যায়?

একটা সত্য স্পষ্টভাবে বলা দরকার—শিক্ষককে বাঁচাতে না পারলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কেবল ভবনের কাঠামো হয়ে থাকবে, প্রাণ থাকবে না।

অতএব, সময় এসেছে আর বিলম্ব না করার।
👉 বাড়ি ভাড়া ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা এখন আর “চাওয়া” নয়,
👉 এটি সময়-নির্ধারিত দাবি,
👉 এটি একটি মানবিক দায়,
👉 এটি রাষ্ট্রের পরীক্ষার সময়।

আমরা চাই না শিক্ষকরা আর রাজপথে বসে থাকুক, চোখের জলে দাবির প্ল্যাকার্ড উঁচিয়ে রাখুক।
আমরা চাই, তাঁদের চোখে যেন আত্মসম্মানের আলো থাকে—একটি স্বাধীন জাতির শিক্ষক হিসেবে।

এখন কথা একটাই:
“রাষ্ট্র যদি শিক্ষককে মর্যাদা না দেয়, তবে জাতি গড়ার স্বপ্ন শুধু মুখের বুলি হয়ে থাকবে।”
তাই সময়ের দাবি—
শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করুন।

মো: তানজিম হোসাইন
শিক্ষক ও সাংবাদিক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page