সরিষাবাড়ী ও ধনবাড়ী প্রতিনিধি:এসএসসি পরীক্ষায় স্কুলজুড়ে ছিল মাত্র একজন পরীক্ষার্থী। শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রস্তুতির পর, দিনটি যখন এল, সেই একজনই কেন্দ্রে গিয়েছিলেন পরীক্ষা দিতে। কিন্তু ফলাফল জানার পর, সব আশার গুঁড়েবালি। কারণ, সেই একমাত্র শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেননি।
এমনই হতাশাজনক চিত্র দেখা গেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রবাজ হুসনারা ওসমানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। পুরো বিদ্যালয়ে একজন মাত্র পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন এবারের এসএসসি-তে। কিন্তু ফলাফলে তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে “অকৃতকার্য” শব্দটি।
এই একটি শব্দ যেন শুধু একজন শিক্ষার্থীর ব্যর্থতা নয়, বরং একটি প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, উপেক্ষা ও নীতিগত দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ।
জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আফসানা তাসলিম বলেন, “শুধু একজন পরীক্ষার্থী থাকা এবং তাঁরও অকৃতকার্য হওয়া খুবই দুঃখজনক। এই ধরণের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষভাবে মনিটর করা হবে। কেন এমন পরিস্থিতি—তা খতিয়ে দেখা হবে।”
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র বলছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জামালপুর জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ২৫ হাজার ৯৭৭ জন। পাস করেছেন ১৫ হাজার ৬৩৬ জন। পাসের হার ৬০.১৯ শতাংশ। যদিও এই হার পূর্বের তুলনায় উন্নত, এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে জামালপুর জেলা এবার শীর্ষে রয়েছে, তবে চন্দ্রবাজ হুসনারার মতো ঘটনা সেই চিত্রে বিষাদের ছোঁয়া এনে দিয়েছে।
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, একটি বিদ্যালয়ে কেবল একজন পরীক্ষার্থী থাকা এবং তাঁর ফেল করাও একটি বার্তা বহন করে—সেটি হচ্ছে গ্রামীণ অঞ্চলের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যত অচল অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষার্থী নেই, নেই পাঠদান, নেই প্রশাসনিক তদারকি—তবুও চলেছে প্রতিষ্ঠান।
একজন পরীক্ষার্থীর ফেল—হয়তো পত্রিকায় ছোট একটি সংবাদ, কিন্তু এর পেছনে রয়েছে অনেকগুলো বড় প্রশ্ন। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে না পারলে, শিক্ষা ব্যবস্থার অন্তঃসারশূন্যতা আর দুর্বল ভিত্তির চিত্র ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপে দেখা দিতে পারে।
You cannot copy content of this page