শিক্ষা সচিব জানালেন—“স্মার্ট ক্লাসরুম আসছে।”
চোখে ভেসে উঠল প্রজেক্টর, ডিজিটাল বোর্ড, ইন্টারনেট—আরও কত আধুনিকতা!
কিন্তু ভেতরটা হঠাৎ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—এসব কে চালাবে?
আমি?
যে মাস শেষে হাতে পাই নামমাত্র বেতন, মাত্র ১,০০০ টাকা বাড়িভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা।
যার বলার মত কিছুই নেই—শুধু আছে কাজ, দায়িত্ব, আর অবহেলা?
কখনও রেগে যাই, উচ্চস্বরে কথা বলে ফেলি।
হ্যাঁ, আমি মানুষ। ভুল হয়, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
কিন্তু আমার এই আচরণের পেছনে লুকিয়ে থাকে অনেক বছরের জমে থাকা ক্লান্তি, অবমূল্যায়ন, আর একরাশ না-পাওয়ার বেদনা।
আমি আমার বেতনের সঙ্গে কাজের চাপ মিলিয়ে দেখি না—কারণ মিলাতে পারি না।
দিনের পর দিন ক্লাস, ফাইল, রিপোর্ট, কমিটি, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন—সবকিছু সামলে নিতে গিয়ে যখন নিজের সন্তানকেও সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না, তখন “ত্যাগী শিক্ষক” কথাটা আর গর্ব নয়, কাঁটার মতো বিঁধে।
২০২৫ সালে এসে এই “ত্যাগের গল্প” বেমানান লাগে।
আমরা গর্ব চাই না, গালভরা প্রশংসাও না। বাঁচার অধিকার চাই।
আমরা চাই ন্যায্য মর্যাদা, সম্মানজনক জীবন।
আমরা ‘স্মার্ট ক্লাসরুম’ চাই—কিন্তু তার আগে চাই ‘স্মার্ট’ সম্মান, ‘স্মার্ট’ বেতন, আর মানবিক বোঝাপড়া।
কারণ, প্রজেক্টর দিয়ে আলো ফেলা যায়—কিন্তু অবহেলায় ডুবে থাকা মন আলোকিত হয় না।
মো: তানজিম হোসাইন
শিক্ষক ও সাংবাদিক
You cannot copy content of this page