এম. আরিফুজ্জামান, পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি: পিরোজপুর জেলার অবহেলিত একটি জনপদ ইন্দুরকানী (জিয়ানগর) উপজেলা। সম্প্রতি প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে এই উপজেলার যথেষ্ট বিপর্যয় লক্ষ করা গেছে।
ইন্দুরকানী (জিয়ানগর) উপজেলায় ১২টি মাধ্যমিক স্কুল এবং ১৮টি মাদ্রাসাসহ মোট ৩০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪৯০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে।
উপজেলার ১২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬৪৫ জন এসএসসি পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ২৮৬ শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ৩ জন। পাশের হার ৪৪.৩৪%।
অপরদিকে, ১৮টি মাদ্রাসার ৫২৮ জন দাখিল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাশ করেছে ৩৯৭ জন শিক্ষার্থী। পাশের হার ৭৫.১৮।
ফলাফল বিপর্যয়ের পিছনে অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং শিক্ষার্থীদের উদাসিনতাকেই দায়ী করছেন অত্র এলাকার সন্মানিত শিক্ষকবৃন্দ। তারা এবছরের ফলাফলকে বিপর্যয় হিসেবে দেখছেন না, বরং এটিই বর্তমান শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার বাস্তব চিত্র বলে মনে করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্বনামধন্য শিক্ষক বলেন, “বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিটিতে রয়েছেন স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষা হয় লোক দেখানো। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলেও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন উপায়ে ফরম ফিলাপ করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। ফলে, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, যারা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে, তারা বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষায়ও অকৃতকার্য হয়েছিল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ম্যানেজিং কমিটি এবং বিদ্যালয় প্রশাসনের আরো কঠোর হতে হবে।“
ইন্দুরকানী মেহেউদ্দিন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হেলাল উদ্দিন গাজী বলেন, বিগত দিনের শিক্ষার্থীদের যেভাবে পাশ করানো হয়েছিলো তার নিয়ম এবার পরিবর্তন হয়েছে। আগে কোন শিক্ষার্থী যদি খাতায় পাশ করার মত নম্বর না পেতো তাহলে শিক্ষা বোর্ড থেকে সেই সকল শিক্ষার্থীদের পাশ করার মত অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার অনুমতি ছিলো। কিন্তু এবছর এমন কোন নির্দেশনা না থাকায় কাউকে খাতায় অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে পাশ করানো হয়নি আর তাই পাশের হার অনেক কম।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্য সব বিষয়ে কিছুটা ভালো করলেও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণিত এবং ইংরেজিতে ফেলের সংখ্যাই বেশি।
You cannot copy content of this page