আজ মাসের ১৪ তারিখ। অথচ দেশের প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী এখনো বেতন পাননি। এ যেন এক নিয়মিত অবহেলা— মাস শেষ হয়ে আসে, বাজারে মূল্যবৃদ্ধি দুর্বিষহ রূপ নেয়, অথচ শিক্ষকের ঘরে বেতনের আলো পৌঁছায় না।
শিক্ষক শুধু পেশাজীবী নন, তিনি জাতি গড়ার কারিগর। অথচ যিনি অন্যকে আলোর পথ দেখান, আজ তাঁর নিজের পরিবার আঁধারে ডুবে আছে। এ অবস্থা কেবল অমানবিক নয়, চরম অপমানজনক।
প্রতিমাসেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন প্রাপ্তিতে দেরির শিকার হন। এর দায় কে নেবে? দায় এড়ানোর জন্য বিভিন্ন কথা না বলে দায় নিতে শিখুক কর্তারা কারণ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা ও উদাসীনতাই এ চিত্রের জন্য দায়ী।
শিক্ষার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ, মাউশির ডিজি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে বেতন বিল প্রস্তুতের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি নিয়মিতভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা সময়মতো নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে তাঁদের সেই পদে থাকার ন্যায্যতা কী?
আমরা মনে করি, এই ব্যর্থতা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি একটি দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার ফল। তাই দায় স্বীকার করে এই মুহূর্তে দায়িত্বপ্রাপ্তদের পদত্যাগই উচিত।
প্রশ্ন হলো, শিক্ষক যদি সুশৃঙ্খলভাবে শ্রেণিকক্ষে হাজির হন, তাহলে প্রশাসন কেন সুশৃঙ্খলভাবে বেতন প্রদানে ব্যর্থ? এ কেমন দ্বিচারিতা?
এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। জাতি হারাবে তার ভবিষ্যৎ নির্মাতা। তাই সময় এসেছে, শিক্ষকদের সম্মান ফেরানোর। আর তার সূচনা হোক সময়মতো বেতন প্রদানের মধ্য দিয়ে।
দয়া করে আর বিলম্ব নয়। অবহেলার দায়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের পদত্যাগ করুন, অথবা শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করুন— এখনই।
মো: তানজিম হোসাইন
শিক্ষক ও সাংবাদিক
You cannot copy content of this page