• বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
হাটহাজারীতে স্লুইসগেটের পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। থানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ধামইরহাটে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন মানিকগঞ্জে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৫ নওগাঁয় অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার ৮ ধাপে আবেদন ফরম পূরণ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির “সর্বজনীন পেনশন নয়, সরকারি পেনশনই চাই” — আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভালুকায় আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাকবিশিস’ ৪৪তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ আজ পহেলা মে, মহান মে দিবস

“প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে”

ছামিউল ইসলাম রিপন / ৭৩ বার দেখা
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

সরিষাবাড়ী ও ধনবাড়ী:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ প্রক্রিয়া অবশেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) একটি প্রস্তাব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অনুমোদন পেলে দেশের প্রায় ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক নতুন বেতন কাঠামোর আওতায় আসবেন।

ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত দশম গ্রেড বাস্তবায়ন করতে সরকারের বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে আনুমানিক ৩৪১ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪০ টাকা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে এবং সেখান থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হবে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য। অনুমোদন পেলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

ডিপিইর পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, হাইকোর্ট বিভাগের রায় (রিট নম্বর: ৩২১৪/২০১৮) অনুযায়ী রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে এবং এ রায় বাস্তবায়নে অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে। এখন অবশিষ্ট প্রধান শিক্ষকদের জন্যও একই স্কেল বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ সরকারের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশিক্ষিতদের ১১তম এবং অপ্রশিক্ষিতদের ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হলে, বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন আদালতে রিট করেন। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয় এবং রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ও রিভিউ আবেদন ২০২২ সালে খারিজ হয়।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন,

> “সরকার যে ইতিবাচকভাবে আমাদের দাবি বিবেচনা করেছে, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। তবে শুধু ৪৫ জনের রায় বাস্তবায়ন নয়, সকল প্রধান শিক্ষকের জন্য দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি আমাদের ছিল এবং থাকবে। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেছি।”

অধিদপ্তরের জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়, দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে ঘিরে কিছু অসাধু চক্র প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে—এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব কর্মকাণ্ড ফৌজদারি অপরাধের শামিল, এবং কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের এসব প্রতারণা থেকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান,

> “সরকার এই প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। কারণ এতে প্রশাসনিক কাঠামোতে বড় কোনো অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হচ্ছে না। এ অবস্থায় প্রস্তাবনাটি দ্রুত অনুমোদন হবে বলে আমরা আশাবাদী।”

তিনি আরও বলেন,

> “আমরা একটি গুজবচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি যারা এই গ্রেড বাস্তবায়নকে ঘিরে চাঁদাবাজির মতো অবৈধ কাজ করছে। আশা করি, শিক্ষক সমাজ এই ফাঁদে পা দেবেন না।”

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হয়েছে। এখন শুধু প্রয়োজন চূড়ান্ত অনুমোদন ও প্রজ্ঞাপন জারি। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের হাজারো শিক্ষক তাঁদের ন্যায্য মর্যাদা ও আর্থিক স্বস্তি লাভ করবেন—যা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page