• মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
হাটহাজারীতে স্লুইসগেটের পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। থানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ধামইরহাটে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন মানিকগঞ্জে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৫ নওগাঁয় অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার ৮ ধাপে আবেদন ফরম পূরণ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির “সর্বজনীন পেনশন নয়, সরকারি পেনশনই চাই” — আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভালুকায় আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাকবিশিস’ ৪৪তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ আজ পহেলা মে, মহান মে দিবস

বেতন নিয়ে জাতির বিবেকের সাথে তামাশা কেন?

প্রতিনিধির নাম / ১৫১ বার দেখা
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

শিক্ষা একটি জাতির মেরুদণ্ড। আর এই মেরুদণ্ড গঠনের কারিগর হলেন শিক্ষক। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আজ সেই আলোকবর্তিকা শিক্ষকরা বারবার অবহেলার শিকার হচ্ছেন। তাদের আত্মসম্মান, শ্রম ও ন্যায্য পাওনা নিয়ে যেন চলছে এক নির্লজ্জ খেলা।

ফ্যাসিবাদী মানসিকতা আর দুর্নীতির দানবেরা আজও ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাসের পর মাস ন্যায্য বেতন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ শিক্ষকদের সম্মান রক্ষার নামে, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়িয়ে, কত কাগুজে ঘোষণা যে এসেছে তার ইয়ত্তা নেই।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিক্ষক স্বার্থে এক মহৎ পদক্ষেপ নিয়েছিল—EFT (Electronic Fund Transfer) নামক এক যুগান্তকারী পদ্ধতি চালু করে। উদ্দেশ্য ছিল একটি—শিক্ষক যেন প্রতিমাসের প্রথম দিনেই বেতন পেয়ে যান। যেন বাঁচে তার মুখের হাসি, বাঁচে তার সংসার, আর যেন সমাজে শিক্ষকতা নামক মহান পেশাটি পায় সম্মানের জায়গা।

কিন্তু বাস্তবতা বড় নির্মম। আজ মাসের ১৫ তারিখ। অনেক শিক্ষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এখনো শুনশান। বেতনের খবরে নেই সাড়া, শুধু আছে আশঙ্কা আর হতাশা। এমনকি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কিছুদিন আগে একটি সময়সূচি দিয়েছিল—প্রতিমাসের প্রথম সপ্তাহেই বেতন ছাড় হবে। শিক্ষকেরা একটু আশার আলো দেখেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আলোও যেন নিভে গেলো কুয়াশার আড়ালে।

এতসব প্রতিশ্রুতি, এতসব প্রকল্প—সবই কি শুধুই চমক? তাহলে প্রশ্ন জাগে, এদেশের আলোকিত মানুষদের সঙ্গে এমন অবহেলা কেন? শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বসে থাকা কিছু অদৃশ্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কি এই পেশাকে ঘৃণা করেন? নাকি শিক্ষকদের হয়রানি করাই তাদের একমাত্র কর্তব্য?

শিক্ষক তো শুধু পাঠদান করেন না, তিনি জাতিকে গড়ে তোলেন। অথচ সেই জাতিগঠনের কারিগর আজ নিজের পরিবারের চাল-ডাল চালাতে হিমশিম খান! শিক্ষকের সন্তান যখন প্রশ্ন করে—”বাবা, এ মাসে এখনও কেন বাজার আনোনি?”—তখন একজন শিক্ষকের হৃদয় রক্তাক্ত হয়ে ওঠে।

আমরা আজ প্রশ্ন তুলতে বাধ্য—এই অবহেলা আর কতকাল চলবে? এই দুর্নীতির শিকল কবে ভাঙবে? জাতির বিবেকদের প্রতি এমন তামাশা আর কতদিন চলবে?

আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—শিক্ষকদের হয়রানিকারী সেই দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের অবিলম্বে চিহ্নিত করুন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শুদ্ধ করুন। EFT প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক নির্ভরতার সঙ্গে, প্রতিশ্রুতি থাকুক বাস্তবতার মাটিতে।

আজ শিক্ষকদের পাশে না দাঁড়ালে, আগামী প্রজন্ম দাঁড়াবে ছায়ার নিচে—আলোকহীন ভবিষ্যতের সামনে।

“শিক্ষককে সম্মান দিন, জাতিকে আলোকিত করুন।”
মো. আল আমিন
প্রভাষক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page