এই বাংলাদেশে জন্মে যে বিষয়টা সবচেয়ে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে শিখেছি, সেটা হলো- এই দেশের মানুষের আচরণগত সমস্যা। সদাচরণ না জানা, আজ আমাদের জাতিগত সমস্যা।
অশিক্ষিতদের কথা না হয় বাদই দিলাম, এদেশের তথাকথিত ডিগ্রিধারী শিক্ষিত এবং উচ্চ ডিগ্রিধারী উচ্চ শিক্ষিত বিভিন্ন পেশাজীবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মাঝেই সদাচরণ জ্ঞান অনুপস্থিত।
এদেশের শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক থেকে শুরু করে শিক্ষিত বেকার কিংবা স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী, তাঁরা যে সম্প্রদায়ের বা মতাদর্শেরই হোকনা কেন, কেউই বুঝেননা অন্যের সাথে কিভাবে সম্মান রেখে কথা বলতে হয়, কাকে কিভাবে সম্বোধন করতে হয়, একজন অক্ষর-জ্ঞানহীন শ্রমিকের সাথে কিংবা একজন প্রতিবন্ধীর সাথে কিভাবে কথোপকথন করতে হয়। ঘুণধরা শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের যেমন মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়ন হচ্ছেনা, তেমনি হচ্ছেনা আচরণগত উন্নতি।
এদেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে শেখানো হয়না- কিভাবে মানবিক হতে হয়, কিভাবে অন্যের সাথে কথোপকথন শুরু ও শেষ করতে হয়, কিভাবে দাঁড়াতে হয়, কিভাবে বসতে হয়, কিভাবে হাঁটতে হয়, কখন কিভাবে হাসতে হয়, কিভাবে অন্যকে প্রশ্ন করতে হয়, কিভাবে প্রশ্নের উত্তর করতে হয়।
সদাচরণ-জ্ঞান এদেশের মর্যাদাবান, মান্যগণ্য ও স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গের মাঝেই প্রায় অনুপস্থিত। লেখাপড়া না জানা একটা মানুষকে অশিক্ষিত বলার পূর্বে শিক্ষিতদের এটা খুঁজে নেওয়া উচিৎ উক্ত গুণগুলো নিজের মাঝে কী পরিমাণে উপস্থিত।
একটা জাতি কতোটা কতটা মানবিক, কতটা মেধাবী, কতটা আধুনিক, কতটা সভ্য, সেটা সেই জাতির কথিত গণ্যমান্য, শিক্ষিত মহলের আচরণ দেখেই অনুমান করা সম্ভব।
এম. আরিফুজ্জামান ,সিনিয়র শিক্ষক (গণিত), ইন্দুরকানী মেহেউদ্দিন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পিরোজপুর।
You cannot copy content of this page