সরিষাবাড়ী ও ধনবাড়ী প্রতিনিধি:
প্রায় এক দশক পর পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত বৃত্তি পরীক্ষা। তবে এবার পরীক্ষার নীতিমালায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত রাখা হয়েছে শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। বেসরকারি ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের জন্য এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, শুধুমাত্র তিন ধরনের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে:
১. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
২. পিটিআই (প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়
৩. সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন প্রাথমিক শাখা (যেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক একত্রে পরিচালিত হয়)
এই তিন শ্রেণির বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক।
তবে পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। একটি বিদ্যালয়ের মোট পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পরীক্ষার জন্য মনোনীত করা যাবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ১০০ জন শিক্ষার্থী থাকে, তাহলে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
শিক্ষার্থী বাছাইয়ের ভিত্তি হবে প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ফলাফল। সেই পরীক্ষার মেধাক্রম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বাছাই করে নির্ধারিত ছকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে। এই কাজটি ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
নীতিমালা অনুসরণ না করলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শ্রেণিশিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
ডিপিই জানিয়েছে, বৃত্তি পরীক্ষায় মোট পাঁচটি বিষয়ে মূল্যায়ন করা হবে। এর মধ্যে বাংলা, ইংরেজি এবং গণিতে ১০০ নম্বর করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। বাকি দুটি বিষয়—বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান—একত্রে একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিটি বিষয়ে থাকবে ৫০ নম্বর করে। অর্থাৎ এ দুই বিষয়ের জন্য মোট ১০০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে।
প্রস্তাবিত সময়সূচি নিম্নরূপ:
* ২১ ডিসেম্বর: বাংলা
* ২২ ডিসেম্বর: ইংরেজি
* ২৩ ডিসেম্বর: গণিত
* ২৪ ডিসেম্বর: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান
প্রতিটি পরীক্ষার সময়সীমা হবে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
এইবারের বৃত্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন প্রস্তুতির হাওয়া বইছে, তেমনি বিদ্যালয়গুলোও বাছাই প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে। যদিও বেসরকারি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় অনেকে হতাশ, তবু সরকারি বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ২০২৫ সালের বৃত্তি পরীক্ষাকে ঘিরে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন এক গতি সঞ্চার হয়েছে।
You cannot copy content of this page