নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজারে মাকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করায় বাবার উপর অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন আফরিন আক্তার রিভা (১৫) নামের এক মেয়ে। এ ঘটনার পর বাবা ও সৎ মা পলাতক রয়েছে। আত্মহত্যা করার আগে সে বাবার কাছে একটি চিঠি লেখে যায়।
নিহত আফরিন আক্তার রিভা পার্শ্ববর্তী পত্নীতলা উপজেলার কাটাবাড়ি গ্রামের আকবর হোসেনের মেয়ে এবং মান্দা থানা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
থানা সূত্রে জানা যায়, নিহতের বাবা আকবর হোসেন স্ব-পরিবারে উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের পার্শে বড়পই গ্রামের ডাঃ আব্দুল সালামের বাসায় ভাড়া থাকতেন। গত দুই মাস আগে তার বাবা আবারও দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরপর গত তিনদিন আগে রিভার মাকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তার মা বাড়ি থেকে চলে যাওয়ায় তার ছোট ভাই ও সে একা হয়ে পরে। এরইমধ্যে গতরাতের কোন একসময় সে তার শয়নকক্ষে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ বিষয়টি জানাজানি হলে তার লাশ ফেলে বাবা ও সৎ মা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন অন্তে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করেন।
মৃত্যুর আগে লেখে যাওয়া চিঠি পাঠকদের জন্য হুবুহু ধরা হলোঃ
শ্রদ্ধেয় মো: আকবর হোসেন:
মো: আকবর হোসেন আপনি ঠিক কতটা খারাপ হয়ে গেছেন তা বলে বোঝানোর মত না। আপনি অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে এসে বলছেন যে আমার মা। আপনি যতটা সহজে কথাটা বলছেন ততটা সহজ কিন্তু না। এখন আমি যদি আপমার মায়ের জায়গায় আরেকটা মেয়েকে নিয়ে এসে বলতাম যে আপনি তাকে মা বলে ডাকবেন পারতেন আপনি মা বলে ডাকতে বলেন পারতেন। আমি দেখছি আমার মা আপনাকে কতটা ভালবেসেছে আর আপনি কতটা আঘাত দিসেন। আপনি ঔ মহিলার মোহে অন্ধ হয়ে আমাদেরকে মিথ্যাবাদী বলছেন আমি কথাটা কখনো কল্পনাও করিনি। আপনি আমার জীবনটাকে তচনচ করে দিসেন। আপনি আমার কাছ থেকে আমার মাকে কেড়ে নিছেন। মানুষ এতোটা খারাপ আপনাদের না দেখলে বুঝতে পারতাম না। আর আমার বান্ধবীদেরকে বলব তোরা অনেক ভালো। তোরা আমার জন্য অনেক কিছু করছিস। যা তোদের আমি মুক্তি দিলাম। আর তোদের বিরক্ত করব না। সবাই বলবে মেয়েটা কতো খারাপ ওর জাহান্নামেও জায়গা হবে না। কিন্তু মেয়েটা যে কতো কষ্ট কতো অভিমান আর কতো দুঃখ নিয়ে এই পৃথিবী থেকে গেছে তা আপনারা কি করে বুঝবেন। আর পারভিন মেমকে কে কি বলছে আমি কিন্তু জানি কিন্তু আমি তার নাম বলব না। তো এতটুকুই আর কাওকে বিরক্ত করব না। আল্লাহ হাফেজ। সবার জন্য দোয়া করব।
সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মুনসুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন অন্তে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
You cannot copy content of this page