বিশেষ প্রতিনিধি, ডেইলি আমাদের ফোরাম : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে দুপুরে তাকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গত ১৮ জুন কলিমুল্লাহসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (DPP) অগ্রাহ্য করে অনুমোদন ছাড়াই নকশা পরিবর্তন ও অতিরিক্ত চুক্তি করা হয়। এ ছাড়া ঠিকাদারকে অগ্রিম বিল প্রদান, ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়, এবং সিকিউরিটি ডিপজিট ব্যাংকে জমা করে ঋণ নিতে সহযোগিতা করার মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা সরকারি ক্রয় নীতিমালা লঙ্ঘন করে দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে। এসব অনিয়মের মাধ্যমে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় অর্থ ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এদিকে, সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে নেওয়া এই আইনি পদক্ষেপে শিক্ষাঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ বলছে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব এ ধরনের ঘটনার জন্য দায়ী। অন্যদিকে শিক্ষক সমাজের কেউ কেউ বিষয়টি তদন্তাধীন অবস্থায় প্রকাশ্যে আলোচনায় না আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব তার আদেশে বলেন, “রাষ্ট্রের অর্থের এমন অপব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মামলার নথিপত্রে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। আসামিকে জেল হেফাজতে রাখা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মেয়াদকালেই এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে এবং প্রয়োজন হলে আরও অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
You cannot copy content of this page