সরিষাবাড়ী ও ধনবাড়ী প্রতিনিধি: কারিগরি শিক্ষা খাতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমপিওভুক্ত বেসরকারি কারিগরি শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া এখন থেকে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। রোববার (২৯ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ “কারিগরি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা ২০২৫” প্রকাশ করে। নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত ও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। এতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর সর্বোচ্চ দুইজন শিক্ষক বদলির সুযোগ পাবেন, তবে পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রে এই সীমা প্রযোজ্য হবে না।
বদলির আবেদন ও সময়সীমা:
• ১৫ সেপ্টেম্বর: শূন্য পদের চাহিদা প্রকাশ করবে এনটিআরসিএ
• ২০ সেপ্টেম্বর: কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর আবেদন আহ্বান করবে
• ১-৩০ অক্টোবর: অনলাইনে আবেদন গ্রহণ
• ২০ ডিসেম্বর: সিদ্ধান্ত গ্রহণ
• ৩০ জানুয়ারি: বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন
বদলির যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া:
প্রথম যোগদানের দুই বছর পর শিক্ষক বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। বদলি হওয়ার পর নতুন কর্মস্থলে ন্যূনতম দুই বছর থাকতে হবে। আবেদনকারী সর্বোচ্চ তিনটি প্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিতে পারবেন।
একই পদের জন্য একাধিক আবেদন পড়লে অগ্রাধিকার বিবেচনায় নারী, স্বামী-স্ত্রীর কর্মস্থলের সামঞ্জস্য, জ্যেষ্ঠতা এবং দূরত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। দূরত্ব নির্ধারণে গুগল ম্যাপের সহায়তা নেওয়া হবে।
সফটওয়্যার-নির্ভর বদলি:
পুরো বদলি প্রক্রিয়া হবে সফটওয়্যারনির্ভর। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর বদলির জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যার এবং আবেদন ফরমেট তৈরি করবে। একজন শিক্ষক জীবনে সর্বোচ্চ তিনবার বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
যাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দিবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশাসনিক সুবিধার জন্য বিশেষ বিধান:
প্রয়োজনে আঞ্চলিক পরিচালকের সুপারিশে বা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ তদন্তপূর্বক বদলির সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
যোগদানের শর্ত:
বদলি আদেশের ২০ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে অবমুক্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং এর পরবর্তী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষককে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। এমপিও ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা আগের মতোই বহাল থাকবে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত:
নীতিমালা প্রয়োগ ও ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের হাতে।
বদলি নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর করে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা আনতে এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আশা করা যায়, এ নীতিমালা বাস্তবায়নে শিক্ষকসমাজের মধ্যে স্বস্তি ও সন্তুষ্টি ফিরে আসবে।
তথ্যসূত্র: শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ২৯ জুন ২০২৫
You cannot copy content of this page