আশুরা (১০ মহররম) ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে বিভিন্ন ইবাদত ও আমলের গুরুত্ব রয়েছে, যা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। ইসলামপূর্ব আরব জাহেলি সমাজে এবং আহলে কিতাব- ইহুদী-নাসারাদের মাঝেও ছিল এ দিনের বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা।
আল্লাহ তায়ালা আশুরার দিন কুদরত প্রকাশ করেছেন। বনি ইসরাইলের জন্য সমুদ্রে রাস্তা বের করে দিয়েছেন এবং তাদের নিরাপদে পার করে দিয়েছেন। আর একই রাস্তা দিয়ে ফেরাউন ও তার অনুসারীদের ডুবিয়ে মেরেছেন।
এই বিশেষ দিনে যেসব আমল করা যেতে পারে:
১. রোজা রাখা:
হাদিসে এসেছে, আশুরার দিন রোজা রাখলে আল্লাহ তা’আলা আগের এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেন। উত্তম হলো: ৯ ও ১০ মহররম, অথবা ১০ ও ১১ মহররম রোজা রাখা।
মুসলিম উম্মাহ এ দিনটিকে বিশেষ আমল তথা রোজা পালনের দিন হিসেবে শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকে। সব নবী-রাসুলের যুগেই আশুরার রোজা আমল ছিল। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় থাকতেও আশুরার রোজা পালন করতেন। হিজরতের পর মদিনায় এসেও নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখতে পেলেন, ইহুদিরা এই দিনে রোজা রাখছে। তিনি রোজা রাখার কারণ জানলেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে বললেন, ‘মুসা আলাইহিস সালামের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ইহুদিদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ ও অগ্রগণ্য। সুতরাং তোমরাও আশুরায় রোজা রাখো। তবে তাদের অনুকরণ বা সাদৃশ্য যেন না হয় সে জন্য তিনি আগের কিংবা পরের ১ দিন রোজা পালনের কথাও বলেছেন।
২. তওবা ও ইস্তিগফার করা:
এ দিনটি তওবার জন্য বিশেষ উপযোগী। নিজের গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
৩. সৎকর্ম ও দান-সদকা:
গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা, পরিবারের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা এবং দান করা উত্তম।
একটি হাদিসে এসেছে:“যে ব্যক্তি আশুরার দিনে নিজের পরিবারের উপর ব্যয় বাড়াবে, আল্লাহ তা’আলা সারা বছর তার রিজিক বাড়িয়ে দেবেন।” — (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান)
৪. নফল নামাজ আদায়:
অতিরিক্ত নফল ইবাদত, তাহাজ্জুদ ও কুরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব।
৫. কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির:
কুরআন পড়া, দোয়া ও দরুদ শরিফ পাঠে মনোযোগী হওয়া উচিত।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুক।
মো: আরিফুজ্জামান, সিনিয়র শিক্ষক, ইন্দুরকানী মেহেউদ্দিন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় পিরোজপুর।
You cannot copy content of this page