• রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
হাটহাজারীতে স্লুইসগেটের পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। থানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ধামইরহাটে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন মানিকগঞ্জে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৫ নওগাঁয় অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার ৮ ধাপে আবেদন ফরম পূরণ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির “সর্বজনীন পেনশন নয়, সরকারি পেনশনই চাই” — আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভালুকায় আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাকবিশিস’ ৪৪তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ আজ পহেলা মে, মহান মে দিবস

“পদোন্নতিতে বৈষম্য: ‘৫০:৫০’ অনুপাত প্রথা বাতিল চায় শিক্ষক সমাজ”

ছামিউল ইসলাম রিপন / ৫৬৩ বার দেখা
আপডেট : শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

সরিষাবাড়ী ও ধনবাড়ী প্রতিনিধি: বেসরকারি কলেজের প্রভাষকদের জন্য চালু হওয়া ‘৫০:৫০ অনুপাত’ নীতিকে শিক্ষক সমাজ বৈষম্যমূলক ও অমানবিক বলে অভিহিত করেছেন। নিয়োগের পর দীর্ঘ ৮ বছর চাকরি করে প্রভাষকরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৬ষ্ঠ গ্রেডে উন্নীত হবেন—এই আশায় নিয়োজিত হলেও ২০১৭ সালের একটি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন প্রতি দুইজন প্রভাষকের মধ্যে কেবল একজন ৫০% এই সুযোগ পাচ্ছেন। এ নিয়ে শিক্ষক মহলে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

কী এই ‘৫০:৫০’ অনুপাত? ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রভাষকদের ৮ বছর চাকরির পরে ৬ষ্ঠ গ্রেডে উন্নীত করার ক্ষেত্রে ‘৫০:৫০’ অনুপাতে পদোন্নতি দেওয়া হবে। অর্থাৎ, প্রতিষ্ঠানভেদে অর্ধেক প্রভাষকই শুধু এই উন্নীতির সুযোগ পাবেন, বাকিরা থেকে যাবেন ৯ম গ্রেডেই। এতে সমান যোগ্যতা, সমান দায়িত্ব ও অভিন্ন অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন।

শিক্ষক নেতারা একে বলছেন ‘কালো আইন’। তাঁদের যুক্তি হলো—একই পদে, একই কর্মস্থলে, সমান দায়িত্ব পালনের পরেও গ্রেডে বৈষম্য সৃষ্টি করা সংবিধানবিরোধী ও মানবাধিকার পরিপন্থী। নিয়োগপত্র, চাকরি বিধি ও জাতীয় বেতন স্কেল—সব কিছুর আলোকে ৮ বছর পূর্ণ হলে সব প্রভাষকই সমানভাবে ৬ষ্ঠ গ্রেডে উন্নীত হওয়ার কথা।

বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস), জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্ট, সরকারি-বেসরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে এ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী:

* ৫০:৫০ অনুপাত কোনো আইন দ্বারা অনুমোদিত নয়; এটি কেবল একটি প্রশাসনিক নির্দেশনা।

* এটি শিক্ষকদের মানসিকভাবে ভেঙে দিচ্ছে এবং কর্মস্পৃহা হ্রাস করছে।

* সারাদেশে বঞ্চিত শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ ও পেশাজীবনে হতাশা বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একই পদে একই শর্তে নিয়োজিতদের মাঝে পদোন্নতিতে বৈষম্য তৈরি করা শ্রম আইন ও সংবিধানের ২৭, ২৯ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। এতে ‘সবার জন্য সমান অধিকার’ নীতির ব্যত্যয় ঘটে।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজে কয়েক হাজার প্রভাষক কর্মরত আছেন। ৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি তাঁদের অধিকার বলে মনে করেন শিক্ষক সমাজ। কারণ:

* তাঁরা জাতীয় শিক্ষানীতির বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

* কলেজ শিক্ষার মানোন্নয়নে সবচেয়ে সরাসরি ভূমিকা তাঁদের।

* প্রভাষকেরাই বেশি ক্লাস নেন, পাঠদান করেন এবং শিক্ষার্থীদের নিকটতম গাইড হিসেবে কাজ করেন।

শিক্ষক সমাজের প্রধান দাবি হলো:

১. বৈষম্যমূলক ৫০:৫০ অনুপাত বাতিল করতে হবে।

২. ৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর সকল প্রভাষককে ৬ষ্ঠ গ্রেড প্রদান করতে হবে।

৩. সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন দ্রুত বাতিল করে নতুন নীতিমালা জারি করতে হবে।

শিক্ষকরা জাতি গঠনের কারিগর। তাঁদের সঙ্গে বৈষম্য করে কোনো জাতির কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সম্ভব নয়। শিক্ষক সমাজের দাবি, শিক্ষার মানোন্নয়নে ও কর্মক্ষেত্রে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ৫০:৫০ অনুপাত নীতি বাতিল করে ৮ বছর পর সকল প্রভাষককে সমানভাবে ৬ষ্ঠ গ্রেড দিতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page