• মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
হাটহাজারীতে স্লুইসগেটের পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। থানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ধামইরহাটে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন মানিকগঞ্জে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৫ নওগাঁয় অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার ৮ ধাপে আবেদন ফরম পূরণ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির “সর্বজনীন পেনশন নয়, সরকারি পেনশনই চাই” — আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভালুকায় আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাকবিশিস’ ৪৪তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ আজ পহেলা মে, মহান মে দিবস

জুলুমের নাম অতিরিক্ত কর্তন — এক শিক্ষক হৃদয়ের ক্রন্দন

প্রতিনিধির নাম / ৩৩৪ বার দেখা
আপডেট : সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

বাড়িভাড়া মাত্র এক হাজার টাকা।
চিকিৎসা ভাতা মাত্র পাঁচশো টাকা।
উৎসব ভাতা—যা হওয়া উচিত ছিল আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনের সঙ্গে একটুখানি হাসির উপলক্ষ—সেটাও মাত্র ৫০ শতাংশ।
এ যেন এক ব্যঙ্গাত্মক বাস্তবতা, এক করুণ কৌতুক, যা চলছে দিনের পর দিন।

শিক্ষকরা সমাজের আলোকবর্তিকা, অথচ নিজের জীবন যেন পড়ে আছে অন্ধকারে। সারা বছর ক্লাসে ক্লাসে ঘুরে জ্ঞান বিলিয়ে যাওয়া এই মানুষগুলো যখন মাস শেষে হাতে পান গুটিকয়েক টাকার চেক, তখন তা দিয়ে জীবন চালানো দূরের কথা, শ্বাসটুকু নেওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়ে।

তার ওপর আবার অবসরকালীন কল্যাণ তহবিলে কেটে নেওয়া হচ্ছিল ৬%।
এই কাটছাঁটও যেন অনেকটা মেনে নিয়েই ছিলেন শিক্ষক সমাজ। কারণ তাঁরা ভাবেন—ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় রাখা ভালো।
কিন্তু হঠাৎ কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সেই ৬% হয়ে গেল ১০%!
আরও ৪% কেটে নেওয়া শুরু হলো শিক্ষক বেতনের ওপর থেকে।

এই সিদ্ধান্ত যেন মাথার ওপর বজ্রাঘাত।
কে দিল এই আদেশ?
কোন যুক্তিতে একজন অল্প আয়ের শিক্ষক থেকে আরও ৪% কেটে নেওয়া হবে?
এটা তো অর্থনৈতিক নিপীড়ন নয়, এটা এক প্রকার রাষ্ট্রীয় বৈষম্য, চরম অবিচার।

একদিকে দেশের সরকারি চাকুরেরা পাচ্ছেন শতভাগ উৎসব ভাতা, নিয়মিত বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট।
অপরদিকে শিক্ষক সমাজকে বছরের পর বছর একই অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছে।
তাঁরা ক্লাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেও সবচেয়ে অবহেলিত, সবচেয়ে বঞ্চিত।

আর এই ১০% কর্তন যেন সমস্ত সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে।
এটা নিছক কোনও প্রশাসনিক ভুল নয়—
এটা একটা আমলাতান্ত্রিক নিষ্ঠুরতা।
এটা একটা ফ্যাসিবাদী আচরণ।
একটি জাতি যখন তার শিক্ষককে সম্মান করতে জানে না, তখন সেই জাতির ভবিষ্যত প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

আমরা শিক্ষকরা কি এতটাই অবহেলার পাত্র?
শিক্ষার্থীদের আলোর পথে চালিয়ে নিয়ে যাই আমরা, অথচ আমাদের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।
দিন শেষে শিক্ষক শুধু টাকার হিসাব করেন না, কিন্তু টাকার অপমানও সহ্য করেন না।

আমরা চাই— 🔹 অবিলম্বে অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ হোক।
🔹 উৎসব ভাতা শতভাগ প্রদান করা হোক।
🔹 বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ম অনুসারে নির্ধারণ করা হোক।
🔹 শিক্ষক সমাজের সাথে আলোচনা করেই নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হোক।

আর না! এবার থামো!
শিক্ষকের চোখে জল থাকলে, সেই জলের প্রতিফলনে জাতির ভবিষ্যৎ ঝাপসা হয়ে যায়।
বেতন কম হতেই পারে, কিন্তু তার ওপর এভাবে বারবার কাটছাঁট করা—এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।
এই জুলুম আর চলতে পারে না।

দেশের সব এমপিওভুক্ত শিক্ষক আজ একবাক্যে বলছেন— “আমরা আর নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে বেঁচে থাকতে চাই না, আমরা সম্মানের সাথে বাঁচতে চাই।”
এই অপবিচারের অবসান চাই—এখনই চাই।

লেখক: মোহাম্মদ আল আমিন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page