নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একজন শিক্ষক সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। গ্রামের বা শহরের মানুষ তাকে চেনে, সম্মান করে। শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষক মা, বাবার পরেই শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু সেই মর্যাদা আজ সমাজে অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা যদি সত্যিই শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে চাই, তবে প্রথমেই শিক্ষকের সামাজিক অবস্থান ও সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে।
শনিবার (১৯ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর লেডিস ক্লাবে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে শিক্ষকরা আর্থিকভাবে অবহেলিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের অন্যরা নানারকম সুযোগ সুবিধা পেলেও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয় না। সরকারি বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে যে বেতন বৈষম্য রয়েছে, তা অযৌক্তিক। একই সিলেবাস, একই উদ্দেশ্যে যদি দুই পক্ষই পড়ায়, তবে আর্থিক বৈষম্য কেন থাকবে?
শিক্ষাব্যবস্থা রাজনীতিকরণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন,, গত ১৫-১৬ বছরে শিক্ষা একজন ব্যক্তি, একটি পরিবার, একটি দল এবং তাদের আদর্শের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে, এটি ভয়াবহ। শিক্ষা কখনো কোনো দলের হয়ে কাজ করে না। শিক্ষা হবে জাতি গঠনের প্রধান হাতিয়ার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষার প্রেক্ষাপট আমাদের আগে বুঝতে হবে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, শিক্ষক, রাষ্ট্র, সমাজ ও শিক্ষার্থী এই চতুর্মুখী সম্পর্কটা আমরা এখনো ধরতে পারিনি। শিক্ষানীতি করতে হলে আগে এই সম্পর্কগুলো স্পষ্ট করতে হবে। কারণ শিক্ষকই ভবিষ্যতের নাগরিক তৈরি করেন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শিক্ষক সমিতির আহবায়ক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টিপুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ মোবারক আলী এবং খন্দকিয়া চিকনদন্ডী স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহিদা আক্তারের পরিচালনায় সন্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম ভূঁইয়া। সন্মেলনের উদ্বোধন করেন শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. জাকির হোসেন। সন্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঐক্যজোটের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি এম এ ছফা চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঐক্যজোটের কক্সবাজার শাখার সভাপতি হোসাইনুল ইসলাম মাতব্বর।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একজন শিক্ষক সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। গ্রামের বা শহরের মানুষ তাকে চেনে, সম্মান করে। শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষক মা, বাবার পরেই শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু সেই মর্যাদা আজ সমাজে অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা যদি সত্যিই শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে চাই, তবে প্রথমেই শিক্ষকের সামাজিক অবস্থান ও সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ নেই মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, লন্ডনে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে মিটিং হয়েছে, সেখানে আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম, সেই মিটিং অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। এর বাইরে আর কোনো পথ নেই।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে কেউ যদি সরে দাঁড়াতে চায়, তাদের মেসেজ দিতে হবে-বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, বাংলাদেশের মানুষ তার দেশের মালিকানা ফিরে পেতে চায়। আর আপনারা যারা গণতন্ত্র চান না, তাদের তো কেউ রাজনীতি করতে বলেনি। আপনারা যারা ভোট চান না, তাদের রাজনৈতিক দল করার দরকার কী! নির্বাচন করবেন না, আবার বলবেন আমি রাজনৈতিক দল, আপনি রাজনৈতিক দল হলে তো জনগণের কাছে যেতে হবে। এটাই তো রাজনীতি।’
You cannot copy content of this page